আপনি কি জানেন ভারতের কোন কোন বৃষ্টিপাত খুব বেশি দেখা যায়??বৃষ্টিপাত সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন উত্তর, শিলা বৃষ্টি কি, এসিড বৃষ্টি কি, গুনে গুড়ি বৃষ্টি কাকে বলে ,

 আপনি কি জানেন ভারতের কোনো কোনো অঞ্চলে অধিক বৃষ্টিপাত হয় কেন?

👉 ভারতে প্রধানত দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুপ্রবাহের জন্য বৃষ্টিপাত হয় এবং এই বৃষ্টিপাত দেশের সর্বত্র সমানভাবে বণ্টিত নয়। বৃষ্টিপাতের বার্ষিক বণ্টন পর্যালোচনা করলে দেখা যায়,দেশের দুটি অঞ্চলে বেশি বৃষ্টিপাত হয়—[1] পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিম ঢালে বা পশ্চিম উপকূল ভূমিতে এবং [2] পূর্ব ও উত্তর-পূওর্ব ভারতে (অসম, অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয়,  

 মণিপুর,নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাংশ এই অঞ্চলের অন্তর্গত)।[1] পশ্চিমঘাট পর্বতেরপর্বতের পশ্চিম ঢালে (প্রতিবাতঢালে) : আরব সাগরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর যে শাখা ভারতে প্রবেশ করে তা পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিম ঢালে প্রথম বাধা পায়। ফলে পশ্চিম উপকূলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়।[2] পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতে: সমগ্র অঞ্চলটি পূর্বাচল ও পূর্ব হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত হওয়ায় দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর বঙ্গোপসাগরীয় শাখা পূর্বাচল ও পূর্ব হিমালয়ে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের অধিকাংশ এলাকায় প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়।

                        চেরাপুঞ্জির বৃষ্টিপাত

1. সীমান্ত কী?

👉  উষ্ণ এবং শীতল বায়ুর মধ্যবর্তী যে বিচ্ছেদ তল থাকে।তাকে, সীমান্ত বলা হয়। নাতিষীতোয় ওউয়ক্রান্তীয় মণ্ডলে সীমান্ত সৃষ্ট হয়।

2. ঘনীভবন কাকে বলে?

 বাতাসের জলীয়বাষ্প যখন শীতল হয়ে তরল জলকণায়।পরিণত হয় তখন সেই অবস্থাকে ঘনীভবন বলে। বৃষ্টিপাত বৃষ্টির জন্য ঘনীভবন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

3. শিশিরাঙ্ক কাকে বলে?

👉 যে উন্নতায় আর্দ্র বায়ুর জলীয়বাষ্প জলকণায় পরিণত হয় সেই উন্নতাকে শিশিরাঙ্ক বলে। ভূপৃষ্ঠ তাপ বিকিরণ করে শীতল হলে শিশির সৃষ্টি হয়।

4. বাষ্পীভবন কী?

 👉যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সূর্যের তাপে সাগর, নদীনালা, হ্রদ,জলাশয় থেকে জল ক্রমাগত বাষ্পে পরিণত হয়। সেই প্রক্রিয়াকেই বাষ্পীভবন বলে।

5. লীন তাপ কী? 

👉যে তাপে উন্নতার পরিবর্তন না ঘটিয়ে শুধুমাত্র পদার্থেরঅবস্থার (কঠিনতরল, তরল গ্যাস, গ্যাস— তরল,তরল—কঠিন) পরিবর্তন ঘটে তাকে লীন তাপ বলে।জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হওয়ার সময় লীন তাপ ত্যাগ করে।

6. কালবৈশাখীর ঝড় কী? 

👉পূর্ব ভারতে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ওডিশা, অসম প্রভৃতিস্থানে মার্চ-এপ্রিল (বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ) মাসে সন্ধ্যের দিকে যে প্রবল বিদ্যুৎ-সহ ঝড়-বৃষ্টি হয় তাকে কালবৈশাখীর ঝড় বলে। ইহা প্রকৃতপক্ষে একপ্রকার পরিচলন বৃষ্টিপাত।

                          কালবৈশাখী ঝড়

7. অতিসম্পৃক্ত বা অতিপরিপৃক্ত বায়ু কাকে বলে?

 👉কোনো নির্দিষ্ট উন্নতায় নির্দিষ্ট আয়তন বায়ুকে সম্পৃক্তকরতে যে পর্যাপ্ত পরিমাণ জলীয়বাষ্প প্রয়োজন হয় বায়ুতে তার তুলনায় অধিক পরিমাণ জলীয়বাষ্প উপস্থিত থাকলে তাকে অতিসম্পৃক্ত বা অতিপরিপূক্ত বায়ু বলে। এই বায়ুর অতিরিক্ত জলীয়বাষ্প ধারণ করার ক্ষমতা থাকে না।

8. অসম্পৃক্ত বায়ু কী?

 👉কোনো নির্দিষ্ট উন্নতায় নির্দিষ্ট আয়তন বায়ুকে সম্পৃক্ত করতে যে পরিমাণ জলীয়বাষ্প প্রয়োজন হয় তার তুলনায় ঐ বায়ুতে কম জলীয়বাষ্প উপস্থিত থাকলে তাকে অসম্পৃক্ত বায়ু বলে। অসম্পৃক্ত বায়ুর উন্নতা বাড়লে জলীয়বাষ্প ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

9. আপেক্ষিক আর্দ্রতা বলতে কী বোঝ ?

👉 কোনো নির্দিষ্ট উন্নতায় নির্দিষ্ট আয়তনের বায়ুতে যেপরিমাণ জলীয়বাষ্প থাকে তার সাথে ওই উন্নতায় সমপরিমাণ বায়ুকে সম্পৃক্ত করতে যে পরিমাণ জলীয়বাষ্প প্রয়োজন হয়,তার অনুপাতকে আপেক্ষিক আর্দ্রতা বলে। সম্পৃক্ত বায়ুর আপেক্ষিক আর্দ্রতা 100 শতাংশ।

10. মিস্ট কী?

👉 জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে অনেক সময় ধোঁয়ার সৃষ্টি করে।এই ধোঁয়া যখন ভূপৃষ্ঠের ওপর দেখা যায় তখন তাকে মিস্ট বলে।

11. স্লিট কী?

👉 স্লিট হল নকুলদানার মতো বরফগুটি। নাতিশীতোয় অঞ্চলে শীতকালে বৃষ্টি বিন্দুগুলি হিমশীতল বায়ুস্তরের মধ্য দিয়ে আসার সময় জমাটবদ্ধ হয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র তুষারকণায় পরিণত হয়ে ভূপৃষ্ঠে পতিত হয়, ইহাই হল স্লিট।

12. শরৎকালে পশ্চিমবঙ্গে যে ঘূর্ণিঝড় হয় তার নাম কী?

👉 শরৎকালে পশ্চিমবঙ্গ ও সন্নিহিত বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়কে ‘আশ্বিনের ঝড়’ বলে। ইহা এক প্রকার ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতজনিত বৃষ্টিপাত।

13. সম্পৃক্ত বায়ু কাকে বলে?

 👉 কোনো নির্দিষ্ট উয়তায় নির্দিষ্ট আয়তনের বায়ুর জলীয়বাষ্প ধারণের যে সর্বোচ্চ ক্ষমতা থাকে এবং বায়ুতে যদি সেই পরিমাণ জলীয়বাষ্প থাকে তবে সেই বায়ুকে সম্পৃক্ত বায়ু বলে। এই বায়ুর আপেক্ষিক আর্দ্রতা 100 শতাংশ।

14. সাম্প্রতিক ভারতে ঘটে যাওয়া এমন দুটি ঘূর্ণবাতেরউদাহরণ দাও?

👉 সাম্প্রতিক ভারতে ঘটে যাওয়া দুটি ঘূর্ণবাত হল—[1] 2009 সালের ঘূর্ণবাত ‘আয়লা'। [2] 2013 সালের ঘূর্ণবাত ‘ফাইলিন’।

15. অধঃক্ষেপণ কী?

👉 জলীয়বাষ্পপূর্ণ বাতাস ওপরে উঠে ঘনীভূত হয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলকণা ও তুষারকণারূপে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে ভূপৃষ্ঠে পতিত হলে তাকে অধঃক্ষেপণ বলা হয়। অধঃক্ষেপণের বিভিন্নরকম রূপ হয়—বৃষ্টি, তুষারপাত, শিলাবৃষ্টি, তুহিন, শিশির,কুয়াশা ইত্যাদি।

16. মেঘ কাকে বলে?

👉 বায়ুর মধ্যে থাকা জলীয়বাষ্প শীতল হলে, ধূলিকণাকে আশ্রয় করে অতি ক্ষুদ্র জলকণা ও তুষারকণারূপে ভাসমান হয়,ইহাই মেঘ। এককথায় বাতাসে ভাসমান জমাটবাঁধা জলকণার সমষ্টিকে মেঘ বলা হয়।

                     মেঘ ও বৃষ্টির পর্যায় সমূহ

17. বৃষ্টি কী?

👉 জলীয়বাষ্পপূর্ণ আর্দ্র বাতাস ঊর্ধ্বাকাশে ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শে এসে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে মেঘ সৃষ্টি করে।এই মেঘের মধ্যে অবস্থিত জলকণাগুলি পরস্পর মিশে বড়ো আকার ধারণ করলে মাধ্যাকর্ষণের টানে পৃথিবীতে ঝরে পড়ে এদের বৃষ্টি বলে।

18. পরিপৃক্ত বায়ু কাকে বলে?

👉 কোনো নির্দিষ্ট উন্নতায় নির্দিষ্ট পরিমাণ বায়ু সর্বাধিক যে পরিমাণ জলীয়বাষ্প ধারণ করতে পারে, সেই পরিমাণ জলীয়বাষ্প বায়ুতে থাকলে বায়ু আর জলীয়বাষ্প ধারণ করতে পারে না। তখন সেই বায়ুকে পরিপূক্ত বায়ু বলে।

19. বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল কাকে বলে?

👉 পর্বতের বৃষ্টিপাতহীন, অনুবাত ঢালকে বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল বলে। উদাহরণ— ভারতের মেঘালয় মালভূমি পর্বতের অনুবাত ঢালে অবস্থিত হওয়ায় ইহা বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল।  

20. অনুবাত ঢাল কী?

👉 পর্বতের প্রতিবাত ঢালের বিপরীতে যে ঢালে বৃষ্টির পরিমাণ কম তাকে অনুবাত ঢাল বলে। উদাহরণ–পশ্চিমঘাট পর্বতের পূর্ব ঢালে জলীয়বাষ্পহীন নিম্নগামী দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সামান্য বৃষ্টিপাত হয়।

21. প্ৰতিবাত ঢাল কী?

👉 পর্বতের যে ঢালে বায়ুপ্রবাহ এসে প্রথম প্রতিহত হয়তাকেই প্রতিবাত ঢাল বলে। উদাহরণ— ভারতে পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিম ঢালে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আরব সাগরীয় শাখা এসে প্রথম বাঁধা পায় ও বৃষ্টি ঘটায় ।

               পশ্চিমঘাটের পশ্চিম ঢালে বৃষ্টিপাত

22. পরিচলন বৃষ্টি কাকে বলে?

👉 যখন কোনো নির্দিষ্ট স্থানে ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন উম্ন ও আর্দ্র বায়ু ওপরে উঠে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায় তখন তাকে পরিচলন বৃষ্টি বলে। যেমন— নিরক্ষীয় অঞ্চলে পরিচলন পদ্ধতিতে বৃষ্টিপাত হয়।

23.  শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টি কাকে বলে?

👉 উষ্ম জলীয়বাষ্পপূর্ণ বাতাস পর্বতের ঢাল বেয়ে ওপরে উঠে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে যে বৃষ্টি ঘটায় তাকে শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টি বলে । শৈল = পর্বত, উৎক্ষেপ = উঁচুতে ওঠা। উদাহরণ— ভারতে পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিমে প্রতিবাত ঢালে শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত ঘটে।

24.  ঘূর্ণবৃষ্টি কী?

👉 উয় আর্দ্র ও শীতল শুষ্ক বাতাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ অথবা বায়ু সীমান্তে মিলনের ফলে এদের মধ্যবর্তী জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে যে বৃষ্টি ঘটায় তাকে ঘূর্ণবৃষ্টি বলে। উদাহরণ— ঘূর্ণবৃষ্টি নাতিশীতোয় ও উম্ন ক্রান্তীয়মণ্ডলে ঘটে।

25. অরণ্য বৃষ্টি কী?

👉 গভীর বনভূমি অঞ্চলে বড়ো বড়ো গাছ দীর্ঘ শিকড়ের মাধ্যমে বাষ্পমোচন ঘটায়। বাষ্পমোচনে নির্গত জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে অরণ্যে যে বৃষ্টি ঘটায় তাকে অরণ্য বৃষ্টি বলে।

26.  শিলাবৃষ্টি কী?

👉উপক্রান্তীয় ও উম্ন নাতিশীতোয়মণ্ডলে প্রচণ্ড ঝড়ের বৃষ্টির জলকণা ঊর্ধ্বাকাশে খুব ঠান্ডা হয়ে বরফকণায় পারদীয় এবং জলীয়বাষ্পের সংস্পর্শে এসে আয়তনে বাড়তে থাকে যখন ঊর্ধ্বগামী বায়ুকে প্রতিহত করতে সমর্থ মাধ্যাকর্ষণের টানে ভূপৃষ্ঠে পতিত হয় এদের শিলাবৃষ্টি বলে।

                               শিলা বৃষ্টি

27. অ্যাসিড বৃষ্টি কী?

👉 বৃষ্টির জলে অ্যাসিড মিশ্রিত থাকলে সেই বৃষ্টিকে অ্যাসিড বৃষ্টি বা অম্লবৃষ্টি বলে। অম্লধর্মী যে সকল ধাতব তাক্সাইড বাতাসে আছে তা বিক্রিয়া করে এটি সৃষ্টি হয়।

28. কুয়াশা কাকে বলে?

👉 জলীয়বাষ্প কখনো কখনো বায়ুস্তরে ভাসমান ধূলিকণা কি আশ্রয় করে ধোঁয়ার মতো ভাসছে তাকে ওই ঘনীভূত ভাসমান জলীয়বাষ্পকে কুয়াশা বলে।

                                কুয়াশা 

   29. শিশির কী?

👉 রাতে ভূপৃষ্ঠাবিকরণ করে শীতল হয়ে পড়ে এবং তার সংস্পর্শে ওই বায়ুর শীতল বায়ু শীতল হয় ফলে ওই বায়ু জলীয় বাষ্প ধারণ করার ক্ষমতা হারায় তখন অতিরিক্ত জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে ভূপৃষ্ঠের তৃণ, বৃক্ষ,পাথরে          সূক্ষ জলবিন্দু রূপে জমে এ গুলিকেই শিশির বলে। 

শিশির

  30. তুহিন কাকে বলে?

👉 শীতপ্রধান দেশে ও উন্নমণ্ডলের উঁচু পর্বত শিখরে রায়ে উন্নতা খুব কমে গেলে সেখানে শিশির বিন্দু জমাট বেঁধেযায়,এইকঠিন জমাট বাঁধা শিশিরকে তুহিন বলে।

31. গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি কাকে বলে?

👉 শীতকালে সমান আকৃতিবিশিষ্ট অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলকণা যখন বাতাসে ভেসে বেড়ায় ও কখনো কখনো ভূপৃষ্ঠে পতিত হয় তাকে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি বলে।

32. আশ্বিনের ঝড় কাকে বলে?

👉 আশ্বিন-কার্তিক (অক্টোবর-নভেম্বর) মাসে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ-সহ ভারতের পূর্বাঞ্চলে যে প্রবল ঘূর্ণবৃষ্টির সৃষ্টি হয় তাকে আশ্বিনের ঝড় বলে। মৌসুমি বায়ুর দিকপরিবর্তন বা প্রত্যাবর্তনের ফলে বঙ্গোপসাগর উপকূলে ইহা সৃষ্টি হয়।

33. পশ্চিমি ঝঞ্ঝা কাকে বলে?

👉 ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারি মাসে সূর্যের দক্ষিণায়নের সময় ভারতে শীতকাল চলাকালীন ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে উদ্ভূত ঘূর্ণবাতের অনুপ্রবেশ ঘটে ও বৃষ্টিপাত হয়। পশ্চিমদিক থেকে এই বায়ু আগমন ঘটে বলে এর নাম পশ্চিমি ঝঞ্ঝা।

34. নিরপেক্ষ বা চরম আর্দ্রতা কী?

👉 কোনো নির্দিষ্ট উয়তায়, নির্দিষ্ট অবস্থিত জলীয়বাষ্পের প্রকৃত পরিমাণকে ঐ বায়ুর চরম বা পরম বা নিরপেক্ষ আর্দ্রতা বলে। এই আর্দ্রতার পরিমাণ শীত অপেক্ষা গ্রীষ্মে, রাত অপেক্ষা দিনে, মেরু অপেক্ষা নিরক্ষ অঞ্চলে বেশি হয়।

35. শীতকালে ভোরবেলা ঘাসের ওপর দিয়ে খালি পায়েহাঁটলে পা ভিজে যায় কেন? 

👉 শীতকালে মেঘমুক্ত রাতে ভূপৃষ্ঠ দ্রুত তাপ বিকিরণ করে শীতল হয়ে পড়ে। ফলে বাতাসে উপস্থিত জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলকণায় পরিণত হয়ে ভোরের দিকে ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন ঘাসের ওপর জমা হয়। তাই ভোরবেলা ঘাসের ওপর দিয়ে খালিপায়ে হাঁটলে পায়ে শিশির লেগে ভিজে যায়।


36.  গ্রীষ্মকালে পরিচলন বৃষ্টি বেশি হয় কেন?

👉 পরিচলন প্রক্রিয়ায় বৃষ্টিপাতের প্রধান কারণ উয়তা।গ্রীষ্মকালে সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ায় উয়তা খুব বেশি হয়। অধিক উন্নতার কারণে জলভাগ থেকে অধিক পরিমাণ জলীয়বাষ্প বাতাসে মেশে। ওই সব জলীয়বাষ্প উদ্বায়ী হয়ে শীতল বাতাসের সংস্পর্শে ঘনীভূত হয়ে প্রথমে মেঘ ও পড়ে বৃষ্টিরূপে নীচে নেমে আসে।

37. সমবর্ষণ রেখা কী?

👉 পৃথিবীর যেসব স্থানে গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত সমান, মানচিত্রে সেইসব স্থানের ওপর দিয়ে যে কাল্পনিক রেখা অঙ্কন করা হয় সেই সকল রেখাকে সমবর্ষণ রেখা বলে।

                            সমবর্ষণ রেখা 

38. শীতল বায়ু থেকে কীভাবে বৃষ্টিপাতের সৃষ্টি হয়?

👉বায়ুর উন্নতা কমে গেলে বা শীতল হলে বায়ুর আপেক্ষিক আর্দ্রতা বেড়ে যায়, ফলে বায়ু দ্রুত সম্পৃক্ত হয়। এই সম্পৃক্ত বায়ু দ্রুত ঘনীভূত হয় ও মেঘের জলকণাগুলি সংযুক্ত হয়ে বড়ো জলকণায় পরিণত হয়ে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে ভূপৃষ্ঠে নেমে আসে। সুতরাং বাতাস শীতল হলেই জলকণা ঘনীভূত হয় এবং বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা বাড়ে।

39.  আপেক্ষিক আর্দ্রতার সাথে উয়তার সম্পর্ক কীরূপ? 

👉 বায়ুর উয়তা বেড়ে গেলে তার জলীয়বাষ্প ধারণ ক্ষমতা বেড়ে যায়, ফলে বায়ুর আপেক্ষিক আর্দ্রতা কমে যায়। আবার বায়ুর উন্নতা কমে গেলে তার জলীয়বাষ্প ধারণ ক্ষমতাও কমে যায়। ফলে বায়ুর আপেক্ষিক আর্দ্রতা বেড়ে যায়। সুতরাং বায়ুর উন্নতা এবং আপেক্ষিক আর্দ্রতার মধ্যে একটি বিপরীতধর্মী সম্পর্ক আছে।

40. এমন দুটি দেশের নাম করো যেখানে সারা বছর পরিচলন বৃষ্টিপাত হয়? 

👉নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চলে সারাবছর পরিচলন প্রক্রিয়ায় বৃষ্টিপাত হয় । পরিচলন বৃষ্টিপাত বেশি হয় এমন দুটি দেশ হল—[1] দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিলের আমাজন অববাহিকা,[2] আফ্রিকা মহাদেশের জাইরে অববাহিকা।

41 আমাদের দেশে বর্ষাকালে সাধারণত কোন ধরনের বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে?

👉 বর্ষাকালে আমাদের দেশে সাধারণত দুই ধরনের বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে—[1] ভারতের পার্বত্য অঞ্চলগুলিতে শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত হয়।[2] পূর্ব ও পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের বহুস্থানে পরিচলন প্রক্রিয়ায় বৃষ্টিপাত হয়।


Comments

Popular posts from this blog

ঈদুল আযহা, কোরবানি কী, কেন কোরবানি করা হয়, কোরবানি করার অর্থ কী?

দর্শন কী ? আজকে আলোচনা করবো দর্শন বিষয় নিয়ে , আপনি কি জানেন দর্শন কথার অর্থ কি? এটি কোথা থেকে কি ভাবে এসেছে ,?

भारत का आयात और निर्यात, भारत के पड़ोसी देश और उनके आयात-निर्यात