"ভারতের পরিচয়, সংবিধান ও মৌলিক অধিকার – এক নজরে"

 ভারতীয় সংবিধান ও মৌলিক অধিকার-কর্তব্য

                         প্রস্তাবনা

“আমরা, ভারতের জনগণ, ভারতকে সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে এবং তার সকল নাগরিকই যাতে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার,
চিন্তা, মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা, সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা
প্রতিষ্ঠা এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তির মর্যাদা এবং জাতীয় ঐক্য ও সংহতি সুনিশ্চিতকরণের
মাধ্যমে তাদের মধ্যে যাতে ভ্রাতৃত্বের ভাব গড়ে ওঠে তার জন্য সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে শপথ গ্রহণ করে,
আমাদের গণপরিষদে আজ, 1949 সালের 26শে নভেম্বর, এতদ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ, বিধিবদ্ধ
এবং নিজেদের অর্পণ করছি।”

ভারতের সংবিধান

ভারতের সংবিধান বিশ্বের সর্ববৃহৎ লিখিত সংবিধান। এটি ২৬শে নভেম্বর ১৯৪৯ সালে গৃহীত হয় এবং ২৬শে জানুয়ারি ১৯৫০ সালে কার্যকর হয়। তাই ২৬ জানুয়ারি দিনটিকে "প্রজাতন্ত্র দিবস" হিসেবে উদযাপন করা হয়।

সংবিধান প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব:

ড. বি. আর. আম্বেদকর (সংবিধান খসড়া কমিটির চেয়ারম্যান)

ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ (ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি)

পণ্ডিত নেহরু, সরদার প্যাটেল, মাওলানা আজাদ প্রমুখ নেতা

ভারতের ইতিহাস ও স্বাধীনতা সংগ্রাম

ভারতের ইতিহাস প্রাচীন ও গৌরবময়। ২০০ বছরের ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বহু সংগ্রামের পর, ১৫ই আগস্ট ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা অর্জন করে। স্বাধীনতার এই সংগ্রামে মহাত্মা গান্ধী, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, ভগত সিং, সরদার বল্লভভাই প্যাটেল, পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু প্রমুখ নেতারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।


ভারত সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:

দেশের নাম: ভারত (ভারতের প্রাচীন নাম "ভারতবর্ষ", রাজা "ভরত"-এর নাম অনুসারে)

মোট আয়তন: ৩২,৮৭,২৬৩ বর্গ কিলোমিটার

রাজধানী: নয়াদিল্লি

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী: নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদী।

বর্তমান রাষ্ট্রপতি: দ্রৌপদী মুর্মু

রাজ্য সংখ্যা: ২৮টি

কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল: ৮টি

সংক্ষিপ্ত পরিচয়

দেশের নাম: ভারত (ইংরেজিতে: India)

রাজধানী: নয়াদিল্লি

ভাষা: হিন্দি (রাজভাষা), ইংরেজি (সহকারী সরকারি ভাষা), এছাড়াও ২২টি সাংবিধানিক ভাষা

মুদ্রা: ভারতীয় রুপি (₹)

জাতীয় প্রতীক: অশোক স্তম্ভ

জাতীয় পতাকা: ত্রিবর্ণ রঙের (গেরুয়া, সাদা ও সবুজ) পতাকা, কেন্দ্রে নীল অশোক চক্র

জাতীয় সংগীত: "জন গণ মন"

জাতীয় সঙ্গীত রচয়িতা: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আয়তন: প্রায় ৩২,৮৭,২৬৩ বর্গ কিমি (বিশ্বে সপ্তম)

জনসংখ্যা: প্রায় ১৪০ কোটির বেশি (২০২৫ সালের প্রাক্কলন)

সীমান্ত সংযুক্ত দেশ: পাকিস্তান, আফগানিস্তান, চীন, নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ, মায়ানমার

জাতীয় সঙ্গীত: “জন গণ মন” (লেখক: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)

মোট জনসংখ্যা: প্রায় ১৪০ কোটি সর্বাধিক সীমান্ত সংযুক্ত দেশ: বাংলাদেশ।

স্বাধীনতা লাভ: ১৯৪৭ সালের ১৫ই আগস্ট সেই সময় 
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু অর্থাৎ আমাদের ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন জওহরলাল নেহরু। ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে ২৬শে নভেম্বর আমাদের সংবিধান গৃহীত হয়েছিল, এবং সংবিধান কার্যকর হয়েছিল ২৬শে জানুয়ারি, ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে। 
তাই এই ২৬শে জানুয়ারি দিনটিকে আমাদের দেশে প্রজাতন্ত্র দিবস হিসাবে পালন করা হয়।

ভারতের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস:
ভারতে প্রাচীনকালে বিভিন্ন রাজারা বিভিন্ন অঞ্চলে শাসন করতেন। মুঘলরা প্রায় ৭০০ বছর রাজত্ব করেন। পরে ইংরেজরা এসে প্রায় ২০০ বছর শাসন করে। ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে আন্দোলন শুরু হয়, যার ফলশ্রুতিতে ১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হয়।

ভারতের সংবিধান ও গঠনের নেপথ্যে ব্যক্তিত্বরা:
ড. বি. আর. আম্বেদকর, সরদার বল্লভভাই প্যাটেল,
মহাত্মা গান্ধী,পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু, ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন, ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ সেন সমস্ত মহান ব্যক্তিদের নেতৃত্বে আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছিল।

মৌলিক অধিকার (ভারতীয় সংবিধানের ১৪-৩৫ ধারা):

১. সাম্যের অধিকার

আইনের চোখে সকল নাগরিক সমান

অস্পৃশ্যতা ও বৈষম্য নিষিদ্ধ

সকলের জন্য সমান সুযোগ


২. স্বাধীনতার অধিকার

বাকস্বাধীনতা, চলাফেরা, ধর্মাচারণ, পেশা নির্বাচন ইত্যাদির অধিকার

আইনবিরুদ্ধ গ্রেফতার থেকে সুরক্ষা


৩. শোষণের বিরুদ্ধে অধিকার

বেগার নিষিদ্ধ

শিশু শ্রম নিষিদ্ধ


৪. ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার

ধর্ম পালনের ও প্রচারের স্বাধীনতা

ধর্মীয় শিক্ষা চাপিয়ে দেওয়া নিষিদ্ধ


৫. সংস্কৃতি ও শিক্ষা-সম্পর্কিত অধিকার

ভাষা, সংস্কৃতি রক্ষা ও প্রচার

শিক্ষার ক্ষেত্রে বৈষম্যহীনতা

সংখ্যালঘুদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠা করার অধিকার


৬. শাসনতান্ত্রিক প্রতিবিধানের অধিকার

মৌলিক অধিকার কার্যকর করার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার অধিকার



---

মৌলিক কর্তব্য (ধারা ৫১এ):

১. সংবিধান, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীতের প্রতি শ্রদ্ধা
২. স্বাধীনতা সংগ্রামের আদর্শকে অনুসরণ
৩. ভারতের ঐক্য ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা
৪. দেশ রক্ষায় অংশগ্রহণ
৫. ভ্রাতৃত্ববোধ ও নারীর প্রতি সম্মান
৬. সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষা
৭. পরিবেশ সংরক্ষণ
৮. বৈজ্ঞানিক ও মানবিক চিন্তাধারা প্রচার
৯. সরকারি সম্পত্তির রক্ষা
১০. ব্যক্তিগত ও সম্মিলিত প্রচেষ্টার উৎকর্ষ
১১. ৬-১৪ বছরের শিশুদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা।

জয় হিন্দ
বন্দেমাতারাম
ভারতমাতা জিন্দাবাদ
ভারতের সংবিধান জিন্দাবাদ
আমার দেশ জিন্দাবাদ
ইনক্লাব জিন্দাবাদ
জিন্দাবাদ, জিন্দাবাদ.........

Comments